জনতার ইশতেহার সম্পর্কে

জনতার ইশতেহার হলো বাংলাদেশের প্রথম জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণমূলক ও প্রযুক্তিনির্ভর ইশতেহার প্রণয়ন প্ল্যাটফর্ম, যেখানে নাগরিকরা শুধু ভোটার নন, বরং জাতীয় নীতিনির্ধারণের সহ-লেখক।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এই প্ল্যাটফর্মটি ব্যবহার করছে একটি সত্যিকারের People-Powered, Data-Driven জাতীয় ইশতেহার তৈরি করার উদ্দেশ্যে। এখানে জনগণের প্রতিটি মতামত, প্রতিটি প্রস্তাব এবং প্রতিটি অগ্রাধিকারই ইশতেহার প্রণয়নের মূল ভিত্তি হিসেবে বিবেচিত হবে।

আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নাগরিকদের মতামত, তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ এবং প্রযুক্তিনির্ভর টুলের সমন্বয়ে Specific, Measurable এবং Time-bound কাঠামোয় একটি অংশগ্রহণমূলক “জনতার ইশতেহার” প্রণয়নই জামায়াতের এই উদ্যোগের লক্ষ্য।

বাংলাদেশে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের ইশতেহার প্রণয়ন প্রক্রিয়া মূলত বুদ্ধিজীবী ও দলীয় নীতিনির্ধারকদের সীমিত আলোচনার মধ্যেই আবদ্ধ থাকে; ফলে সাধারণ জনগণের মতামত ও প্রত্যাশা সেখানে খুব কমই প্রতিফলিত হয়। এই কারণে ইশতেহার অনেক সময় জনগণের বাস্তব জীবন, স্থানীয় চ্যালেঞ্জ এবং অগ্রাধিকারের সঙ্গে সংযোগ হারায়। ফলস্বরূপ, তা জনআকাঙ্ক্ষার প্রকৃত প্রতিফলন না হয়ে একটি সাধারণ নীতিপত্রে পরিণত হয়, যা জনগণের আস্থা অর্জনে ব্যর্থ হয় এবং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও কার্যকর ফল দিতে পারে না।

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী এই সীমাবদ্ধতার মূল জায়গায় পরিবর্তন আনতে চায়। এজন্য তারা এমন একটি ইশতেহার প্রণয়ন মডেল গ্রহণ করেছে, যেখানে জনগণের সরাসরি মতামত, স্থানীয় সমস্যা এবং অগ্রাধিকার তথ্যভিত্তিকভাবে প্রতিফলিত হবে। Measurable কাঠামোর ভিত্তিতে প্রতিশ্রুতি নির্ধারণের মাধ্যমে ইশতেহার কেবল একটি রাজনৈতিক ঘোষণাপত্রে সীমাবদ্ধ না থেকে বাস্তবায়নযোগ্য উন্নয়ন পরিকল্পনায় রূপ নেবে।

Promise Tracker প্রবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে, যেখানে নাগরিকরা সহজেই দেখতে পারবেন কোন অঙ্গীকার বাস্তবায়িত হয়েছে, কোনটি চলমান, আর কোনটির অগ্রগতি থেমে আছে বা মন্থর। এটি শুধু স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করবে না; বরং রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে নাগরিক আস্থা, অংশীদারিত্ব এবং নীতি-নির্ভর রাজনীতির একটি নতুন ধারা প্রতিষ্ঠা করবে।

১. জাতীয় সমন্বিত ইশতেহার: এই অংশটি হবে দেশের জন্য অভিন্ন একটি “মৌলিক নীতি ও রূপরেখা”। এর লক্ষ্য হলো জাতীয় অগ্রাধিকারের খাতগুলো যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, সরকারি সেবা, বাণিজ্য, পরিবেশ, প্রযুক্তি, কর্মসংস্থান ইত্যাদি সম্পর্কিত সমস্যার সমাধান ও প্রয়োজনীয় সংস্কারের ক্ষেত্রে জনগণের মতামতকে অন্তর্ভুক্ত করা। এই অংশের মাধ্যমে একটি এমন জাতীয় ইশতেহার প্রণয়ন করা সম্ভব হবে, যেখানে দেশের সর্বস্তরের মানুষের চিন্তা, চেতনা ও আকাঙ্ক্ষার সুষম প্রতিফলন ঘটবে।

২. প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার জন্য আলাদা ইশতেহারের ভাবনা: দ্বিতীয় স্তরটি মাঠপর্যায়ের বাস্তবতা ও অঞ্চলভেদে ভিন্ন চাহিদার ভিত্তিতে প্রস্তুত করা যেতে পারে, যাতে একই নীতি সর্বত্র একরূপে প্রয়োগ করার পরিবর্তে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার উপযোগী ‘স্থানীয় সমাধান’ (Context-Specific Local Solutions) উপস্থাপন করা যায়। এর ফলে স্থানীয় জনগণের প্রকৃত সমস্যা, অগ্রাধিকার ও সম্ভাবনাকে প্রতিফলিত করে আরও কার্যকর এবং বাস্তবসম্মত উন্নয়ন রূপরেখা তৈরি করা সম্ভব হবে।

১. প্রচলিত ইশতেহারের সীমাবদ্ধতা ও জনগণের বঞ্চনা

বাংলাদেশে বহু বছর ধরে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি হয় খুব সীমিত পরিসরে, কিছু নীতিনির্ধারক ও বিশেষজ্ঞের মধ্যে আলোচনা পর্যন্তই তা সীমাবদ্ধ থাকে। ফলে সাধারণ মানুষের বাস্তব জীবন, স্থানীয় সমস্যার প্রকৃতি, তরুণদের স্বপ্ন, নারীদের প্রয়োজন কিংবা উদ্যোক্তাদের চ্যালেঞ্জ, সবই প্রায় উপেক্ষিত থেকে যায়। ইশতেহার বইয়ের পাতায় লেখা থাকে, কিন্তু মানুষের জীবনের সঙ্গে তার বাস্তব সংযোগ তৈরি হয় না। ফলে ইশতেহার জনগণের আস্থা অর্জন করতে ব্যর্থ হয় এবং এটি কার্যকর উন্নয়ন পরিকল্পনার বদলে কেবল একটি ঘোষণাপত্রে পরিণত হয়।

২. জনগণের কথা শোনার নতুন রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি: জামায়াতের উদ্যোগ

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিনের এই সীমাবদ্ধতা পরিবর্তন করতে চায়। নীতি প্রণয়নের শুরুতেই যদি জনগণের কণ্ঠ অনুপস্থিত থাকে, তবে সেই নীতি পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই বাস্তবতা বিবেচনায় জামায়াত বেছে নিয়েছে “জনতার ইশতেহার”, একটি অংশগ্রহণমূলক প্ল্যাটফর্ম, যেখানে কৃষক, শ্রমিক, তরুণ, নারী, উদ্যোক্তা, সব শ্রেণি-পেশার মানুষ তাদের প্রয়োজন ও অগ্রাধিকারের কথা জানাতে পারবেন। এই সকল মতামতই হবে জাতীয় ইশতেহারের ভিত্তি।

৩. প্রযুক্তি, ডেটা ও বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে একটি আধুনিক ইশতেহার

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইশতেহার সাধারণত প্রতিশ্রুতির একটি তালিকা হয়ে থাকে, যার অনেকটাই বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় এবং যার অগ্রগতি জনগণ জানতে পারে না। এই সীমাবদ্ধতাকে অতিক্রম করতে প্রয়োজন একটি প্রযুক্তিনির্ভর, data-driven এবং বাস্তবভিত্তিক আধুনিক ইশতেহার প্রণয়ন পদ্ধতি।

এই প্রস্তাবিত আধুনিক ইশতেহারে:

  • সমস্যা নির্ধারণ হবে অনুমান বা রাজনৈতিক বক্তব্যের ভিত্তিতে নয়; বরং প্রকৃত তথ্য, পরিসংখ্যান ও বাস্তব ডেটা বিশ্লেষণের ওপর।
  • প্রতিটি প্রতিশ্রুতির সঙ্গে থাকবে পরিমাপযোগ্য KPI, নির্দিষ্ট সময়সীমা এবং অর্জনের স্পষ্ট সূচক।
  • অগ্রগতি অনুসরণের জন্য থাকবে রিয়েল–টাইম লাইভ ট্র্যাকার, যেখানে নাগরিকরা সহজেই দেখতে পারবেন কোন প্রতিশ্রুতি কোন পর্যায়ে রয়েছে।
  • নীতি–প্রণয়নের পুরো প্রক্রিয়ায় ব্যবহৃত হবে ডেটা অ্যানালিটিক্স, জিও–ম্যাপিং, ভোটার ইনসাইট, AI–নির্ভর সার্ভে বিশ্লেষণসহ বিভিন্ন আধুনিক প্রযুক্তি, যাতে সিদ্ধান্ত হয় আরও নির্ভুল, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক।

ফলে ইশতেহার আর শুধু নির্বাচনের সময় দেওয়া রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতিতে সীমাবদ্ধ থাকবে না; এটি পরিণত হবে একটি আধুনিক, প্রমাণ–ভিত্তিক উন্নয়ন–পরিকল্পনায়, যা নাগরিকদের আস্থা বৃদ্ধি করবে, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের গতি ত্বরান্বিত করবে এবং সামগ্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আনবে কাঙ্ক্ষিত স্বচ্ছতা।

৪.  স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ইশতেহারের সহ-লেখক: আস্থার নতুন ভিত্তি

বাংলাদেশে প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয় কি না, মানুষকে সেই তথ্য কখনোই জানানো হয় না। জনতার ইশতেহারের “Promise Tracker” সেই সংস্কৃতি বদলে দিবে। এখানে প্রতিটি প্রতিশ্রুতি, বাস্তবায়িত, চলমান, স্থবির বা চ্যালেঞ্জযুক্ত, সবকিছুই জনগণের সামনে রিয়েল-টাইমে প্রদর্শিত হবে। এভাবে জামায়াত স্পষ্টভাবে বলে, “আমরা শুধু প্রতিশ্রুতি দিই না, তার অগ্রগতিও আপনাদের দেখাই।” এটি একটি টেকসই, বিশ্বাসযোগ্য রাজনৈতিক সম্পর্কের জন্ম দিবে, যা দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে বিরল একটি বিকল্পধারা সূচনা করবে।

১. অংশগ্রহণমূলক ইশতেহার প্রণয়ন: দেশের শ্রমিক, কৃষক, ব্যবসায়ী, পেশাজীবী, উদ্যোক্তা, শিক্ষক, প্রবাসী, তরুণ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতকে অন্তর্ভুক্ত করে একটি সত্যিকারের জন অংশগ্রহণমূলক ইশতেহার প্রণয়ন করা। শহর–গ্রাম ও অনলাইন–অফলাইন–উভয় পরিবেশে অংশগ্রহণের সুযোগ তৈরি করে সাধারণ নাগরিককে নীতি প্রণয়নের সহ-রচয়িতা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা।

২. জাতীয় ও স্থানীয় ইশতেহারের সমন্বয়: প্রতিটি নির্বাচনী এলাকার বাস্তব সমস্যা, অগ্রাধিকার ও সম্ভাবনা “ন্যাশনাল-প্লাস-লোকাল” মডেলে উপস্থাপন করা হবে। এতে জাতীয় নীতির সঙ্গে স্থানীয় বাস্তবতার সংযোগ স্থাপন হবে এবং জনগণের অংশগ্রহণ আরও দৃঢ় হবে।

৩. Promise Tracker- জবাবদিহির ডিজিটাল মাধ্যম: নির্বাচন-পরবর্তী প্রতিটি অঙ্গীকারের অগ্রগতি জনগণের জন্য উন্মুক্ত ডিজিটাল “Promise Tracker”-এ প্রদর্শন করা যাবে, যাতে নাগরিকরা দেখতে পারেন কোন প্রতিশ্রুতি কতটা বাস্তবায়িত হয়েছে। এই উদ্যোগ রাজনীতিতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহির নতুন মানদণ্ড তৈরি করবে।

৪. ডেটা-চালিত ও রিয়েল-টাইম নীতিনির্ধারণ: স্বাস্থ্য, শিক্ষা, কৃষি, পরিবহন, প্রযুক্তি, নিরাপত্তা, পরিবেশ ও অর্থনীতি প্রতিটি খাতের অগ্রাধিকার নির্ধারণে তথ্যভিত্তিক ও রিয়েল-টাইম ডেটা-ড্যাশবোর্ড ব্যবহার করা। এতে সিদ্ধান্ত হবে বাস্তবসম্মত, দ্রুত ও নাগরিক চাহিদাভিত্তিক।

৫. রাজনৈতিক দলগুলোর গ্রহণযোগ্যতা ও বিশ্বস্ততা বৃদ্ধি এবং জবাবদিহিমূলক রাজনৈতিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা: গণতন্ত্রকে টেকসই করতে হলে রাজনীতিকে শুধুমাত্র প্রতিশ্রুতির ওপর নির্ভরশীল না রেখে ফলাফল-নির্ভর ধারায় এগিয়ে নেওয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, রাজনৈতিক দলগুলো যদি তাদের প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি, অর্জন ও সীমাবদ্ধতা নিয়মিতভাবে জনগণের সামনে তুলে ধরে, তবে তা প্রাতিষ্ঠানিক স্বচ্ছতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। এতে জনগণের আস্থা পুনর্গঠিত হবে, রাজনৈতিক দলগুলোর বিশ্বাসযোগ্যতা ও নৈতিক দায়বদ্ধতা আরও দৃঢ় হবে, এবং সামগ্রিকভাবে রাজনীতি হবে আরও অংশগ্রহণমূলক ও জবাবদিহিমূলক।

৬. তরুণ ও প্রথমবারের ভোটারদের সম্পৃক্তকরণ: “আগামী বাংলাদেশ তোমাদেরই” এই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে তরুণ ও প্রথমবারের ভোটারদের সরাসরি ইশতেহার প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় যুক্ত করা। “তোমরা কী চাও, সেটা বলো” এই আহ্বানের মাধ্যমে নতুন প্রজন্মের মতামত, মূল্যবোধ ও উদ্ভাবনী চিন্তা জাতীয় নীতিতে প্রতিফলিত করার সুযোগ তৈরি করা। এতে তরুণদের মধ্যে দায়িত্ববোধ, অংশীদারিত্ব ও ভবিষ্যৎ নির্মাণের আত্মবিশ্বাস গড়ে উঠবে।

১। জনগণের অংশগ্রহণ (Public Participation)

জনতার ইশতেহারের মূল শক্তি হলো জনগণের সরাসরি অংশগ্রহণ। নাগরিকরা ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ, সামাজিক মাধ্যম এবং মাঠপর্যায়ের প্রচারণার মাধ্যমে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, বাণিজ্যসহ নানা বিষয়ে মতামত দিতে পারবেন। সংগৃহীত মতামত স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিশ্লেষণ ও র‌্যাঙ্কিংয়ের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হবে, যাতে জনপ্রিয়, বাস্তবসম্মত ও প্রয়োগযোগ্য প্রস্তাবগুলো অগ্রাধিকার পায়।

ফলাফল: ইশতেহার হবে এমন কিছু, যা মানুষ নিজের বলে অনুভব করবে: “এটি শুধু দলের ইশতেহার নয়, এতে আমার স্বপ্নও জায়গা পেয়েছে।”

২। অনলাইন ইশতেহার (Online Manifesto)

দেশের প্রতিটি অঞ্চলের প্রয়োজন, চ্যালেঞ্জ ও জনগণের মতামত বিশ্লেষণ করে প্রস্তুত করা হবে একটি সমন্বিত জাতীয় ইশতেহার, যা অনলাইনে সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। এতে জাতীয় ইস্যুর পাশাপাশি স্থানীয় সমস্যার সমাধানও যুক্ত হবে। জাতীয় ইশতেহার একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে দেখা যাবে, যা নাগরিকদের অংশগ্রহণকে জাতীয় নীতি প্রণয়নের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত করবে।

ফলাফল: জাতীয় লক্ষ্য ও স্থানীয় বাস্তবতার সমন্বয়ে একটি আধুনিক ইশতেহার- “One Nation, 300 Voices.”

৩। অনলাইন প্রমিজ ট্র্যাকার (Promise Tracker)

নির্বাচনের পর প্রতিশ্রুতিগুলোর অগ্রগতি পর্যবেক্ষণে সহায়তার উদ্দেশ্যে একটি ডিজিটাল “Promise Tracker” প্রবর্তনের বিষয়টি বিবেচনায় রাখা হয়েছে। প্রতিটি প্রতিশ্রুতির অগ্রগতি অনলাইন ড্যাশবোর্ডে নির্দিষ্ট স্ট্যাটাস হিসেবে প্রদর্শিত করা যেতে পারে যেমন বাস্তবায়িত, চলমান, স্থবির, বাধাগ্রস্ত এবং অসম্পন্ন। এই ডেটা-বেইজড ভিজ্যুয়াল ট্র্যাকার নাগরিকদের দ্রুত বুঝতে সাহায্য করবে কোন প্রতিশ্রুতির কতদূর অগ্রগতি হয়েছে।

ফলাফল: স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং তথ্যভিত্তিক রাজনীতির একটি নতুন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করবে।

এই উদ‍্যোগ বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো ভোটাররাই ইশতেহারের সহ–লেখক হয়ে উঠবেন, আর জামায়াত প্রকাশ করবে একটি সত্যিকারের “জনতার ইশতেহার”। এখানে প্রতিটি সমস্যা উপস্থাপিত হবে ডেটা–সমর্থিত ও বাস্তব পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে; প্রতিটি অঙ্গীকার থাকবে পরিমাপযোগ্য, স্পষ্ট KPI-সহ; এবং প্রতিটি অগ্রগতি দেখা যাবে রিয়েল–টাইম লাইভ ট্র্যাকার-এ জনগণের সামনে সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে। এভাবে একটি রাজনৈতিক দল প্রথমবারের মতো প্রতিষ্ঠা করবে People-Powered, Tech-Driven Manifesto-র নতুন মানদণ্ড, যেখানে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ, জবাবদিহি ও বিশ্বাসযোগ্যতা হবে রাজনীতির মূল ভিত্তি।

“জনতার ইশতেহার” শুধু একটি ইশতেহার নয়; এটি গণতন্ত্র, প্রযুক্তি ও জবাবদিহির সম্মিলিত রূপরেখা, যা প্রতিটি নাগরিককে নতুন বাংলাদেশের সহ–আর্কিটেক্টে পরিণত করবে এবং নীতি প্রণয়নের কেন্দ্রবিন্দুতে জনগণকেই প্রতিষ্ঠিত করবে।